ছাত্র অবস্থায় আমরা প্রত্যেকে চাই যে নিজের হাত খরচের জন্য হলেও কিছু টাকা আয় করতে। অনেক সময় পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে আমাদের বাবা মা আমাদের পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খায়। অন্যদিকে পড়াশোনার খরচ বাদে আমাদের আলাদা একটা চাহিদা থাকে তা পূরণের জন্য আমাদের টাকার প্রয়োজন হয়। তাই ছাত্র অবস্থায় আমরা টাকা উপার্জনের মাধ্যম খোঁজে থাকে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির কারণে বর্তমান সময়ে অনলাইনে কাজ করে খুব সহজেই টাকা আয় করা সম্ভব।
কুইক লিংক
ছাত্রজীবনে টাকা আয় করা প্রয়োজন কেন?
ছাত্রাবস্থায় আমাদের সকল প্রাতিষ্ঠানিক খরচ বহন করে আমাদের পরিবার। তবে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের বাবা-মার আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো হয় না। যার কারণে পারিবারিক অসচ্ছলতা দেখা দেয় এবং সন্তানের প্রাতিষ্ঠানিক খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। এ সময় একজন সন্তান হিসেবে আপনার নিজের খরচ নিজে চালানো অত্যন্ত জরুরী।
- আপনি নিজেই আপনার শিক্ষার খরচ চালাতে পারবেন।
- অনলাইন কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ভবিষ্যতে পড়াশোনা শেষ করার পর অন্যান্য চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
- অনলাইন থেকে টাকা আয় করার মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা পূরণের বাইরে নিজের অন্যান্য হাত খরচ চালাতে পারেন।
- বর্তমান সময়ের সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে যার কারণে আপনি অনলাইন প্রফেশনাল হিসেবে নিতে পারেন।
অনলাইনে টাকা আয় করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
টাকা আয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু জিনিস জোগাড় করতে হবে।
- কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ। তাছাড়া আপনি স্মার্ট ফোনের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন।
- হাই স্পিড এর ইন্টারনেট কানেকশন।
- ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা। কম্পিউটারের বেসিক সম্পর্কে ভালো জ্ঞান।
ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অনলাইনে ইনকাম
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এখন অনলাইনে টাকা আয় করার সহজ একটি মাধ্যম। তবুও আমাদের মধ্যে একটি কুসংস্কার রয়েছে যার ফলে আমরা মনে করি যে এগুলা ভুয়া মিথ্যা। তবে আপনি যদি একটু সচেতন হয়ে যাচাই বাছাই পূর্বক কাজে নামেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে সফল হতে পারবেন। আজকে আমরা আপনাদের নির্ভুল কিছু তথ্য দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইনে কিভাবে টাকা আয় করতে হয় তা শেখাব।
ব্লগিং
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পরিচিত নাম ব্লগিং। তবে এটা করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা লাগবে। অতঃপর সেখানে নিয়মিত বিষয়ভিত্তিক কনটেন্ট প্রকাশ করা লাগবে। এরপর বিভিন্ন এড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আপনি টাকা আয় করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আমরা আপনাকে সাজেস্ট করব গুগল এডসেন্স। কেননা তারা দীর্ঘ সময় ধরে এড নেটওয়ার্ক সার্ভিস দিয়ে চলেছে।
ইউটিউব এর মাধ্যমে টাকা আয়
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউব। আপনি চাইলে এই জনপ্রিয় ওয়েব সাইটে কাজ করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। ছাত্র অবস্থায় আপনি যদি ভাল একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পড়াশোনা কাজে লাগিয়ে ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের বিভিন্ন সমাধান ভিডিও আকারে ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন। তাছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছাত্রীরা পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত সহ অন্যান্য বিষয়ের সমাধান ভিডিও করে তা আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলতে আমরা বুঝি আপনি ঘরে বসে থেকে অনলাইনের মাধ্যমে অন্য কোন কোম্পানি বা ব্যক্তিকে কাজে সহায়তা করা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে অন্য কোন ব্যাক্তি কেন আপনাকে তার সহকারী হিসেবে কেন রাখবে? আমাদের দেশের বেশিরভাগ বড় বড় কোম্পানির মালিকরা তাদের সহকারী নিযুক্ত করেন। কিন্তু ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলতে এটা আমাদের দেশ না বহিঃবিশ্বের কথা বোঝানো হয়েছে। আমরা জানি যে বিদেশী অনেক বেশি পরিশ্রমী।
তাদের কাজের একটি নির্দিষ্ট রুটিন রয়েছে। তাদের কাজের অতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে তারা অনেক সময় বড় বড় কাজ ধরতে পারেনা। এ অবস্থায় তাদের একজন সরকারি প্রয়োজন। যার জন্য তারা বেশ কিছু ওয়েবসাইটের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিযুক্ত করার পোস্ট শেয়ার করে। fiber.com freelancer.com এসকল ওয়েবসাইটের আপনি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর অনলাইন জব খুঁজে পেতে পারে। তবে মনে রাখবেন ক্লায়েন্টের সাথে আপনার যোগাযোগ যেন নিয়মিত হয় ।
ওয়েব ডিজাইনিং/ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার
আপনি চাইলেই একজন সফল ওয়েব ডেভেলপার অথবা ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হতে পারেন। ওয়েবডেভেলাপার বলতে একটি ওয়েবসাইট কিভাবে সাজানো যায় এবং তা গুগোল র্যাঙ্কিংয়ে কিভাবে প্রভাব ফেলবে তা। ওয়েবডেভেলাপার জন্য আপনি চাইলে আমাদের দেশীয় বিভিন্ন কোর্স রয়েছে সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে থেকেই একজন সফল ওয়েব ডেভলপার হতে পারেন।
অন্যদিকে ওয়ার্ডপ্রেস এর জন্য আপনার একটি ফ্রি ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে পারবেন। আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন পাশাপাশি অন্যের ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজ করে দিতে পারেন। যার ফলে উভয় দিক থেকে আপনি উপকারী হবেন। তাই আপনি খুব সহজেই একজন ওয়েব ডেভেলপার ও ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হয়ে টাকা আয় করতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং
আপনার যদি নিজস্ব কোন ওয়েবসাইট না থেকে থাকে তাহলে আপনি অন্যের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট রাইটিং করে টাকা আয় করতে পারেন। কেমন আছো তো অবস্থায় আমাদের লেখালেখির হাত অনেক ভালো থাকে। পাশাপাশি আপনার ইংরেজী ও বাংলায় যদি ভালো জ্ঞান থাকে তাহলে আপনি দেশি ও বিদেশি বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যারা আপনার কনটেন্ট কিনতে আগ্রহী। তাদের কাছে নিয়মিত কনটেন্ট বিক্রি করে আপনি ভালো অংক টাকা আয় করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন আপনাকে কনটেন্ট ভালো মানের হওয়া লাগবে।
উপসংহার
উপরে আমরা বেশ কিছু তথ্য প্রদান করেছি আমাদের দেয়া উপদেশ আপনি পালন করলে অবশ্যই অনলাইন থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন আপনি যায় করুন তা অবসর সময়ে করবেন কেননা পড়াশোনার ক্ষতি করে কোন কিছু করা উচিত নয়। জীবনে তাড়াতাড়ি সফলতা পাওয়ার জন্য আপনি অনলাইনে আয় করার পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন। ধন্যবাদ আমাদের পাশে থাকার জন্য।
গণি করা