সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা জিপিএফ এর টাকা কি হালাল

আপনারা যারা সরকারি চাকরি শেষে সাধারন প্রভিডেন্ট ফান্ড পেয়ে থাকেন অথবা জিপিএফ পেয়ে থাকেন তাদের জন্য আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেয়া হবে এই টাকাটা আসলে হালাল কিনা। এর আগে যখন মানুষজন সরকারি চাকরিতে ঢুকে তখন এতটা ভাবতো না। কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষের ধারণা এবং চিন্তা-চেতনা ইসলামিক হয়ে যাওয়ার কারণে সরকারি চাকরি করার পরে যখন যে বিশাল অংকের প্রভিডেন্ট ফান্ড পেয়ে থাকে তা আসলে কতটা হালাল অনেকেই জানতে আগ্রহ বোধ করে থাকেন।

তাছাড়া ইন্টারনেটের যুগে প্রত্যেকটি তথ্য যখন খুব সুন্দর ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে তখন মানুষের মনের এই অনুসন্ধিৎসু দূর করার জন্য আমরা আজকে এই বিষয়ে এই তথ্য উপস্থাপন করতে চলেছি। সরকারি চাকরি হোক অথবা কিছু কিছু বেসরকারি চাকরি হোক, একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে আপনার শরীরে যখন বার্ধক্যে চলে আসবে তখন আপনি হয়তো আর সেই পরিমাণে সার্ভিস দিতে পারবেন না।

মানুষের জীবনের যে চক্র রয়েছে সেই চক্রে আপনি একটা সময় কাজ করতে করতে একসময় আপনাকে বিশ্রাম গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু আপনি যার প্রতিনিধিত্ব করলেন বা যার হয়ে কাজ করলেন তিনি আপনার ভবিষ্যতে আপনার এবং আপনার সন্তানদের সুরক্ষা নিশ্চিত এর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কোম্পানির নীতিমালা অনুসারে অথবা সরকারি নীতিমালা অনুসারে প্রদান করবে।

এটা একটা নাগরিকের অধিকার। তাছাড়া এই টাকাটা আপনাকে যখন প্রদান করছে তখন তারা তাদের নিজস্ব একাউন্ট থেকে তা প্রদান না করে আপনার বেতন এর একটা অংশ প্রফিডেন্ট ফান্ড হিসেবে জমিয়ে রাখছে। সেই জমিয়ে রাখা টাকা একটা সময় পরে আপনার চক্রবৃদ্ধি হারে মুনাফা বাড়তে বাড়তে আপনাকে একটি বড় পরিমাণ এর বা বড় অঙ্কের টাকা প্রদান করে।

হিসেব অনুযায়ী আপনারা হয়তো ভেবে থাকেন আপনাদের এই টাকা হয়তো সুদের টাকা অথবা আপনাদের অরিজিনাল টাকার চাইতেও অনেক গুণে বৃদ্ধি পেয়ে এই টাকাটা প্রদান করা হচ্ছে বলে তাতে মুনাফা জড়িত আছে এবং এটি একটা সময় আপনাদের জন্য হালাল হবে না। কিন্তু যে টাকাটা প্রদান করছে এটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত টাকা এবং এই টাকাটা আপনাকে প্রদান করছে বলে আপনি আপনার পরবর্তী প্রজন্ম বা আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর ভাবে নিশ্চিত করে চলাচল করতে পারেন বলে এটি আপনার জন্য প্রয়োজন।

প্রত্যেকটা দেশে অথবা অনেক দেশেই এই নিয়ম চালু হয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক এই বিষয়গুলো পরিচালিত হয়ে থাকে বলে এক্ষেত্রে আপনি টাকাটা নিতে পারেন এবং টাকাটা অবশ্যই আপনার জন্য হালাল। কিন্তু আপনার কাছে এসেই টাকাটা চক্রবৃদ্ধি হারে যে টাকাটা অতিরিক্ত আসলো এই টাকাটা নিয়ে আপনার যদি মনের ভেতরে দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে যে এটি আসলে সুদের টাকা তাহলে এক্ষেত্রে বিভিন্ন মাওলানা এই সমস্যার সমাধান প্রদান করেছেন।

তাদের মতে আপনার এত দিনের যে বেসিক বা আসল টাকা জমেছে সেই টাকাটা আপনি নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারেন এবং যে টাকাটা আপনার কাছে এসে চক্রবৃদ্ধি হারে প্রদান করেছে বা পেয়েছেন সেই টাকাটা আপনি বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার এতদিনের বেতনের যে অংশ আপনার থেকে কেটে রাখা হয়েছে সেটি নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারেন এবং এই টাকাটা আপনি নিজের ব্যক্তিগত খরচ করতে পারেন এবং অন্য টাকা আপনি হয়তো মানুষের কল্যাণে সেগুলো খরচ করে ফেলতে পারেন কোন সমস্যা হবে না।

আবার বেশ কিছু সমাধান এ বলা আছে কিন্তু টাকা গুলো আপনারা সরাসরি গ্রহণ করতে পারেন এবং এক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই এবং এই টাকাগুলো বৈধ। কিন্তু আপনি প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা গ্রহণ করে যখন কোন ডিপিএস অথবা এমন কোন প্রতিষ্ঠানে জমা রাখবেন যেখানে সেই টাকা আরও সুদ এর মাধ্যমে বৃদ্ধি পাবে তখন সেই টাকাটা আপনাদের জন্য হালাল হবে না। তবে সেই টাকা দিয়ে যদি আপনি নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে লাভবান হতে পারেন এমন কোন কাজ করে তাহলে সেই টাকাটা বৈধ হবে। তবে সেই টাকা কোন অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় হিসেবে জমা রেখে সেই সময়ের লাভ গ্রহণ করাটা হালাল নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *