বাংলাদেশ পাসপোর্ট অনলাইন কপি ডাউনলোড করবেন কিভাবে

আমাদের জাতীয় জীবনে পাসপোর্ট একটি বিশেষ প্রয়োজনীয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। যতই দিন পার হচ্ছে, মানুষের মাঝে ততই বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যদি আমাদের অতীতের সময়গুলোর দিকে আলোকপাত করি তাহলে দেখতে পাই যে, আগের চেয়ে মানুষের পাসপোর্টের চাহিদা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। পাসপোর্ট হলো যেকোন দেশে ভ্রমণের পূর্ব শর্ত। পাসপোর্ট ব্যতীত নিজের দেশ ছাড়া অন্য কোন দেশে ভ্রমণের আর কোন আইনানুগ উপায় নেই। পাসপোর্ট ব্যতীত অন্য যেসকল উপায় রয়েছে বিদেশ ভ্রমণের প্রত্যেকটি হলো অবৈধ। তাই বৈধ উপায়ে যদি কেউ বিদেশ ভ্রমণ করতে চাইলে তার অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে। গত কয়েক বছরে সারা বিশ্বেই পাসপোর্টধারীর সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণে। অন্যান্য দেশের মত, বাংলাদেশের জনগণের মাঝেও পাসপোর্ট ব্যবহারের প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ একটি স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবন যাত্রাতেও এসেছে বিপুল পরিবর্তন। এখন বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দেখতে চায় গোটা বিশ্ব। শুধুমাত্র ভ্রমণের জন্যই না, আরও বেশ কিছু কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখন বিদেশে ভ্রমণ করতে চায়। যেমন, ঊচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে , উন্নত চিকিৎসার জন্য, ব্যবসার কারণে এবং আরও বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশএর মানুষ এখন বিদেশ ভ্রমণ করতে আগ্রহী। আর এই বিদেশ ভ্রমনের জন্য চাই পাসপোর্ট। বাংলাদেশে পাসপোর্ট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হলো, এখন পাসপোর্ট পাওয়া আগের চেয়ে অনেক সহজসাধ্য। আগে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হলে, বিভিন্ন ধরণের ঝক্কি-ঝামেলার সম্মুখীন হতে হতো, এখন আর তা হতে হয় না। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন পাসপোর্টের আবেদন করা হয়ে গেছে খুবই সহজ। এখন আর আগের মোট ঘন্টার পর ঘন্টা আপেক্ষা করে লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে তা পূরণ করার দরকার নেই। এখন ঘরে বসে বা যেকোন জায়গা থেকেই সহজেই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা সম্ভব অনলাইনের মাধ্যমে। তাহলে স্বভাবতই এখন প্রশ্ন দাঁড়ায় যে, কীভাবে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবো। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমেই কোন কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের ব্রাউজারে গিয়ে বাংলাদেশ পাসপোর্ট রেজিষ্ট্রেশন লেখে সার্চ করলেই বাংলাদেশ সরকারের পাসপোর্ট আবেদন এর ওয়েবসাইটটি পাওয়া যাবে। সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যাবে অনলাইন পাসপোর্ট ফরম পূরণ ও পিডিএফ ডাউনলোডের দুটি অপশন। অনলাইন ফরম পূরণে ক্লিক করার পর, আবেদন ফরম পূরণ করা যাবে। আবেদন ফরমটি সঠিক তথ্যাবলি দিয়ে পূরণ করে, তার একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে নিতে হবে।

পাসপোর্টের পূরণকৃত ফরমটি ডাউনলোড করে তা প্রিন্ট করে নিতে হবে এবং এক কপি অনলাইনেই জমা থাকবে। এরপর নির্দিষ্ট পরিমান টাকা অর্থাৎ পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে নিকটস্থ যেকোন ব্যাংকে। টাকাটি জমা দেওয়া যাবে চালানের মাধ্যমে। যদি কেউ ব্যাংকে না গিয়ে টাকা জমা দিতে চায় তাও করা সম্ভব। টাকা জমা দেওয়ার অন্যান্য মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং। টাকা জমা দেওয়া হয়ে গেলে পূরণকৃত ফরম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও টাকার রশিদের কপি জমা দিতে হবে নিকটস্থ কোন পাসপোর্ট অফিসে। এখন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলাতেই রয়েছে জেলা পাসপোর্ট অফিস। পাসপোর্ট অফিসে সকল কাগজ জমা দেওয়া হয়ে গেলেই শুরু হয়ে যাবে পাসপোর্টের কার্যক্রম। কয়েকটি নির্দিষ্টধাপ পার হলে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝেই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব। সকল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়ে গেলে, আবেদনকারীকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ দেয়া হবে পাসপোর্ট অফিসে সাক্ষাতের জন্য। সেই নির্দিষ্ট তারিখে অবশ্যই আবেদনকারীকে উপস্থিত থাকতে হবে পাসপোর্ট অফিসে এবং সেই দিন আবেদনকারীর হাতের আংগুলের ছাপ ও রেটিনা স্কান করা হবে। সব ধাপ পার হয়ে গেলে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হবে। এখন বাংলাদেশের সকল নতুন পাসপোর্টই হলো ই পাসপোর্ট। টাই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে গেলে এর একটি অনলাইন কপিও পাওয়া যাবে অনলাইনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *